ধানের স্কিপারগুলো সব ধানী পরিবেশে পাওয়া যায় কিন্তু বৃষ্টি নির্ভর ধান ক্ষেতে এদের প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।
এরা কমলা চিহ্ন সম্বলিত হালকা বাদামি রঙের হয় এবং ডানায় সাদা রঙের একটি বৈশিষ্ট্যগত নকশা রয়েছে।
পূর্ণাঙ্গ পোকা দিবাচর হয় এবং তাদের ঝটপট উড়ার ক্ষমতা রয়েছে, যেহেতু এদের নামানুসারে এরা একগাছ থেকে আরেক গাছে উড়ে যায়।
স্ত্রী পোকা সাদা বা ফ্যাকাশে হলুদ, গোলাকার ডিম পাড়ে। লার্ভাগুলো নিশাচর হয়। এগুলো প্রায় ৫০ মিমি আকারের ও সবুজ রঙের হয় এবং মাথার উভয় পার্শ্বে লালচে উল্লম্ব ডোরা দাগ যুক্ত থাকে।
পিউপা হালকা বাদামী বা হালকা সবুজ রঙের হয় এবং মাথা চোখা হয়।
ক্ষতির ধরণঃ
ধানের সদ্য রোপিত চারা গাছ প্রথমে আক্রান্ত হয়। বড় বড় লার্ভা বেশির ভাগ পত্র মোচনের জন্য দায়ী।
এ পোকার কীড়াগুলো ধানের পাতার পাশ থেকে খেতে খেতে মধ্যশিরার দিকে আসে।
কয়েকটি বৃহৎ লার্ভা কখনও কখনও শুধুমাত্র মধ্য শিরা রেখে বাকি পাতা খেয়ে ফেলে।
ক্ষতির ব্যপ্তিঃ
ধানের স্কীপার পোকা তেমন মুখ্য ক্ষতিকর পোকা নয়। এদের আক্রমণের দ্বারা ফলন লোকসান হওয়ার ঘটনা খুবই বিরল।
খরা,ভারী বৃষ্টি বা বন্যার মত চরম আবহাওয়া এদের বিস্তারের জন্য অনুকুল।
কীটনাশকের অপব্যবহার উপকারী পোকামাকড় ধ্বংস করে এবং এ কারণে ধানের স্কিপার পোকার আক্রমণ পরিলক্ষিত হয়।
আক্রান্ত ফসলের নমুনা
জৈবিক ও যান্ত্রিক পদ্ধতিতে দমনঃ
আলোর ফাঁদের সাহায্যে পূর্ণবয়স্ক মথ ধরে ধ্বংস করা।
পরজীবী এবং শিকারী পোকা জমিতে ধানের স্কিপার পোকার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
লাঠি ব্যবহার করে চারা গাছের পাতায় আঘাত করে লার্ভাকে নিচে ফেলে দিন (যা পরে ডুবে মারা যাবে)।
রাসায়নিক পদ্ধতিতে দমনঃ
শতকরা ২৫ ভাগ পাতা ক্ষতিগ্রস্থ হলে কীটনাশক ব্যবহার করা।
এ পোকা দমনের জন্য- গোলা ৪৮ ই সি ১০ মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমিতে স্প্রে করতে হবে। একর প্রতি মাত্রা ২০০ মিলি।
পোকার আক্রমণ প্রতিরোধ করতে আক্রমণের পূর্বে- থায়োসাইড ৭৫ ডব্লিউ ডি জি ১.৫ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। বিঘা প্রতি মাত্রা ১০ গ্রাম।