ধানের খোলপঁচা রোগ (Sheath rot)

রোগবালাই

পরিচিতিঃ

  • বাংলাদেশে ধানের প্রধান রোগগুলোর মধ্যে খোলপচা অন্যতম ক্ষতিকারক রোগ।
  • রোগ জীবাণু- Sarocladium oryzae  নামক ছত্রাক দ্বারা হয়ে থাকে। 
  • এটা বীজবাহিত।
  • রোগটি সাধারনত ধানের থোড় অবস্থা থেকে শুরু হয়।
  • বাংলাদেশের প্রায় সকল অঞ্চলেই রোগটি দেখা যায় এবং এ রোগ ধানের ফলন ও গুণগতমান কমিয়ে দেয়। 

ক্ষতির ধরণঃ

  • রোগটি কোন অবস্থাতেই পাতায় হয় না। 
  • খোল পঁচা রোগটি যে কোন খোলে হতে পারে তবে শুধুমাত্র ডিগ পাতার খোল আক্রান্ত হলেই ক্ষতি হয়ে থাকে। 
  • ধানে থোড় আসার সময় এই রোগের আক্রমণ দেখা যায়। 
  • প্রথমে শেষ পাতার খোলের উপর গোলাকার বা অনিয়মিত লম্বা দাগ হয়। 
  • দাগের কেন্দ্র ধূসর ও কিনারা বাদামী রং বা ধূসর বাদামী হয়। 
  • দাগগুলো একত্রে বড় হয়ে সম্পূর্ন খোলেই ছড়াতে পারে। 
  • থোড়ের মুখ বা শীষ পঁচে যায় এবং গুড়া ছত্রাংশ খোলের ভিতর প্রচুর দেখা যায়। 
  • রোগের আক্রমণ বেশি হলে অনেক সময় শিষ আংশিক বের হয় বা মোটেই বের হতে পারে না এবং ধান কালো ও চিটে হয়ে যায়।

ক্ষতির ব্যপ্তিঃ

অনুকূল পরিবেশ

  • মাজরা পোকা ও টুংরো রোগ আক্রান্ত গাছে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়। 
  • গরম ও স্যাঁতসোঁতে আবহাওয়ায় এ রোগ বৃদ্ধি পায়। 
  • বৃষ্টির ঝাপটায় এ রোগ ছড়ায়। 
  • খোলপঁচা রোগটি সব মৌসুমেই দেখা যায়। 
  • সাধারনত গাছের থোর অবস্থা এ রোগটির উপযোগী সময়। 
  • চৈত্র মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয়ে ক্রমান্বয়ে জ্যৈষ্ঠ মাস ও আষাঢ় মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত এ রোগের আক্রমণ বাড়তে থাকে, এমনকি আষাঢ়ের শেষ-শ্রাবণের শুরুতে কিছুটা কমলেও শ্রাবণের শেষ-ভাদ্রের পুরো মাসটাই তীব্রতর থাকে; তবে আশ্বিন মাসে কিছুটা কমলেও কার্তিক মাসে বেশ তীব্রতর হয়ে অগ্রহায়ণ মাসে কমতে থাকে।
আক্রান্ত ফসলের নমুনা

জৈবিক ও যান্ত্রিক পদ্ধতিতে দমনঃ

  • সুস্থবীজ ব্যবহার করা। 
  • খড়কুটা জমিতে পুড়িয়ে ফেলা। 
  • ইউরিয়া সারের ব্যবহার পরিমিত রাখা। 
  • বীজ শোধন করা।

রাসায়নিক পদ্ধতিতে দমনঃ

  • খোলপঁচা রোগ দমনের জন্য- এসিবিন ২৮ এস সি ১০ মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। একর প্রতি মাত্রা ২০০ মিলি। 
  • অথবা ডিফার ৩০০ ই সি ৭.৫ মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। একর প্রতি মাত্রা ১৫০ মিলি। 
  • অথবা কন্‌জা প্লাস ১০ এস সি ৫ মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। একর প্রতি মাত্রা ১০০ মিলি।

সুপারিশকৃত পণ্য সমূহ

আমাদের ব্র্যান্ডসমূহ