বাকানী (Bakanae) বা গোড়াপঁচা (Foot-rot) রোগ

রোগবালাই

placeholder

পরিচিতিঃ

  • ধানের বাকানি একটি পরিচিত রোগ। এটি একটি বীজবাহিত রোগ।
  • রোগের জীবাণু-Fusarium moniliformae নামক ছত্রাক।

  • ছত্রাকজনিত এই রোগ গোড়া পচা বা সাদা ডাটা রোগ নামেও পরিচিত এবং পৃথিবীর প্রায় সকল ধান উৎপাদনকারী দেশ এই রোগটি দেখা যায়।

  • ১৯৫৩ সালে প্রথম এই রোগ বাংলাদেশ দেখা যায় এবং তখন থেকে সর্বত্রই এই রোগের বিস্তার ঘটে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এর প্রাদুর্ভাব বেশি। বিশেষত সিলেট অঞ্চলে এটি একটি বড় সমস্যা।

  • এ রোগের আক্রমণে ১৫% পর্যন্ত ফলন ঘাটতি হতে পারে। কোন কোন দেশে এই রোগ দ্বারা ৪০% পর্যন্ত ফলন ঘাটতির নজির পাওয়া গেছে।

ক্ষতির ধরণঃ

  • এ রোগের সবচেয়ে স্পষ্ট লক্ষণ হলো আক্রান্ত চারা স্বাভাবিক চারার চেয়ে প্রায় দ্বিগুন লম্বা হয় এবং আক্রান্ত চারার পাতা হলদে সবুজ হয়। 
  • আক্রান্ত চারাগুলো বেশী দিন বাঁচে না। আক্রান্ত গাছের কুশি লিকলিকে হয়। 
  • এদের ফ্যাকাশে সবুজ পাতা অন্যান্য গাছের উপর দিয়ে দেখা যায় এবং নিচের দিকে গিঁটে অস্থানিক শিকড়ও দেখা যেতে পারে। 
  • আক্রান্ত গাছ যদি কোন রকমে বাঁচে তবে সেগুলো থেকে চিটা ধান হয়।

ক্ষতির ব্যপ্তিঃ

  • বাকানি বা গোঁড়াপচা রোগের আক্রমণের ফলে ধানের ফলন শতকরা প্রায় ১৫% - ৪০% পর্যন্ত কমতে পারে।

অনুকূল পরিবেশ

  • সাধারণত ঠান্ডা আবহাওয়ায় এই রোগ কম হয়। 
  • অধিক মাত্রায় নাইট্রোজেন সার ব্যবহার এবং ৩০-৩৫ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা এ রোগের অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করে। 
  • ধানগাছে বৈশাখ মাসের শুরুতেই বাকানি রোগের আক্রমণ লক্ষ্য করা যায়। তারপর ধীরে ধীরে বাড়তে বাড়তে জ্যৈষ্ঠ মাসে তীব্রতর হয়ে শ্রাবণের শেষ-ভাদ্রের শুরু পর্যন্ত সময়ে তীব্রতর থেকে ভাদ্রের শেষে কমতে থাকে। তারপর কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে কিছুটা আক্রমণ লক্ষ্য করা যায়।
আক্রান্ত ফসলের নমুনা

জৈবিক ও যান্ত্রিক পদ্ধতিতে দমনঃ

  • বীজতলা আর্দ্র বা ভিজে রাখুন। 
  • আক্রান্ত গাছ তুলে পুড়িয়ে ফেলা। 
  • চারা লাগানোর ক্ষেত আক্রান্ত হলে আক্রান্ত জমির পানি শুকিয়ে ফেলুন। 
  • একই জমি বীজতলার জন্য ব্যবহার না করা। 
  • আক্রান্ত গাছ তুলে পুড়িয়ে ফেলা।

রাসায়নিক পদ্ধতিতে দমনঃ

  • এমকোজিম ৫০ ডব্লিউ পি দ্বারা বীজ ও চারা শোধন কিরে নিতে হবে। 
  • গাছের চারা অবস্থায় রোগ প্রতিরোধের জন্য- এমকোজিম ৫০ ডব্লিউ পি ১০ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। একর প্রতি মাত্রা ২০০গ্রাম।

সুপারিশকৃত পণ্য সমূহ

আমাদের ব্র্যান্ডসমূহ