গমের জাব পোকা (Aphids of Wheat)

ক্ষতিকর পোকামাকড়

পরিচিতিঃ

  • জাবপোকা খুব ছোট, নরম শরীরের দীর্ঘ পা এবং অ্যান্টেনা বিশিষ্ট একটি পোকা। 
  • তাদের আকার ০.৫-২ মিমি পর্যন্ত এবং তাদের শরীরের রং প্রজাতির ভিন্নতার উপর নির্ভর করে হলুদ, বাদামী, লাল বা কালো হতে পারে। 
  • তারা সাধারণত অঙ্কুরশীর্ষে এবং কচি পাতার নীচে গুচ্ছাকারে থাকে এবং দলবদ্ধভাবে খাবার খায়। 
  • তারা তাদের দীর্ঘ মুখ-উপাঙ্গ ব্যবহার করে উদ্ভিদের কোষকলা থেকে তরল শোষণ করে। 
  • এদের কয়েকটি প্রজাতি উদ্ভিদ ভাইরাস বহন করে যা অন্যান্য রোগের বিকাশ ঘটাতে পারে।

ক্ষতির ধরণঃ

  • স্বল্প পরিমান আক্রমনে এ পোকা তেমন ক্ষতি করতে পারে না। আক্রমন বেশি হলে কচি পাতা এবং ডগা হলুদাভ বর্ণ ধারণ করে, কুঁকড়িয়ে নেতিয়ে পড়ে এবং গাছ খর্বাকৃতির হয়। 
  • সার্বিকভাবে, গাছের তেজ অনেকটা কমে যেতে দেখা যায়। জাব পোকা গাছের কোষ অংশ থেকে চুষে খাওয়ার ফলে এ পোকা নিঃসৃত তরলের গায়ে ছত্রাকের জন্ম হয় এবং বিভিন্ন প্রকার রোগের সৃ্ষ্টি করে। 
  • পাতার উপরে মোল্ডের বৃদ্ধি দেখে তা সহজেই বোঝা যায়। 
  • স্বল্প সংখ্যক জাব পোকাও গাছ থেকে গাছে দ্রুত ভাইরাস রোগ ছড়াতে পারে। 
  • এ পোকা পাতা, গাছ ও কচি দানার রস চুষে খায়। 
  • এর আক্রমন বেশি হলে শুটি মোল্ড ছক্রাকের আক্রমন ঘটে এবং গাছ মরে যায়।

ক্ষতির ব্যপ্তিঃ

অনুকূল পরিবেশ

  • জাবপোকা প্রায় সারা বছরই বংশ বৃদ্ধি করতে পারে। তবে শীতকালে মেঘলা কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া জাব পোকার বংশ বৃদ্ধি ও আক্রমণের প্রধান সময়।  
  • ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি হতে এ পোকার সংখ্যা বাড়তে থাকে। 
  • এদের বংশবৃদ্ধির জন্য শুষ্ক এবং আর্দ্র আবহাওয়ার প্রয়োজন হয়।

জৈবিক ও যান্ত্রিক পদ্ধতিতে দমনঃ

  • সাবানযুক্ত পানি স্প্রে করা যায় অথবা আধাভাঙ্গা নিমবীজের পানি (১ লিটার পানিতে ৫০ গ্রাম নিমবীজ ভেঙ্গে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে ছেঁকে নিতে হবে) আক্রান্ত গাছে ১০ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করলে পোকা নিয়ন্ত্রন করা যায়। 
  • এছাড়াও তামাকের গুড়া (১০গ্রাম), সাবানের গুড়া (৫গ্রাম) ও নিমের পাতার রস প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। 
  • প্রাকৃতিক ভাবে জন্মানো জাবপোকার শত্রু যেমন পরজীবী বোলতা, পরজীবী লেইসবাগ, সেনা বিটল, ও লেডিবার্ড বিটল সন্তোষজনকভাবে জাবপোকা দমন করে।

রাসায়নিক পদ্ধতিতে দমনঃ

  • এ পোকা দমনে টিডো ২০ এস এল ১০ মি.লি. ১০ লিটার পানিতে ভালভাবে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করে প্রয়োগ করতে হবে। একর প্রতি মাত্রা ২০০ মি.লি.। 
  • অথবা টিডো প্লাস ৭০ ডব্লিঊ ডি জি ২ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে।
  • ১০ দিন পর পর ২-৩ বার স্প্রে করুন।

সুপারিশকৃত পণ্য সমূহ

আমাদের ব্র্যান্ডসমূহ