আলুর লেইট ব্লাইট বা মড়ক রোগ বিশ্বজুড়ে অন্যতম একটি ক্ষতিকারক রোগ। এ রোগ বাংলাদেশের আলু উৎপাদনের প্রধান অন্তরায়। ১৯৯০ সালের পর থেকে বাংলাদেশে আলুর চাষাবাদ বিস্তারের পাশাপাশি এ রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়তে থাকে। এটি মূলত এক ধরনের শ্যাওলা/শৈবাল (algae) জাতীয় উদ্ভিদ। এ কারণেই স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ার মধ্যে এর প্রাদুর্ভাব বাড়ে। এর প্রাথমিক ও প্রধান পোষক আলু।
আলুর মড়ক বা লেইট ব্লাইট রোগের আক্রমণে আলুর ফলন গড়ে শতকরা ৩০ ভাগ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
১. রোগের আক্রমণে প্রথমে গাছের গোড়ার দিকে পাতায় ছোপ ছোপ ভেজা হালকা সবুজ গোলাকার বা বিভিন্ন আকারের দাগ দেখা যায়, যা দ্রুত কালো রং ধারণ করে এবং পাতা পঁচে যায়।
২. সকালে মাঠে গেলে আক্রান্ত পাতার নীচে সাদা পাউডারের মত জীবাণু দেখা যায়।
৩. ঠান্ডা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় আক্রান্ত গাছ দ্রুত পঁচে যায়। এ অবস্থায় ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যেই ক্ষেতে সমস্ত গাছ মারা যেতে পারে।
৪. এ রোগে আক্রান্ত আলুর গায়ে বাদামি থেকে কালচে দাগ পড়ে এবং খাবার অযোগ্য হয়ে যায়।
ক্ষেত মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হলে পচা দুর্গন্ধ হতে পারে।
গবেষনায় জানা গেছে যে –
আলুর মৌসুমে যদি নিম্নলিখিত ৪ টি অবস্থার সমন্বয় ঘটে তাহলে রোগ মহামারীরূপে দেখা যায়।
(১) রাতের তাপমাত্রা কমপক্ষে ৪ ঘন্টা শিশির হওয়ার উপযুক্ত উষ্ণতার (dew point) নিচে থাকলে,
(২) রাতে ১০° সেঃ অথবা এর কিছু বেশি তাপমাত্রা থাকলে।
(৩) পরবর্তী দিনে আকাশ মেঘাচ্ছন্নতার (cloudiness) গড় ০.৮ হলে,
(৪) এর পরে ২৪ ঘন্টায় কমপক্ষে ৩.১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলে রোগ মহামারী আকারে দেখা যায়।