ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতা পোড়া রোগ (Bacterial Blight)

রোগবালাই

placeholder

পরিচিতিঃ

  • রোগের জীবাণু- Xanthomonas oryzae
  • এটি ঝলসানো রোগ নামেও পরিচিত। 
  • পাতাপোড়া রোগের ব্যাকটেরিয়া জীবাণু আক্রান্ত- গাছ বা তার পরিত্যক্ত গোড়া, কুটা ও বীজ এবং আগাছার মধ্যেও থাকতে পারে। 
  • এ রোগের ফলে গাছের বিভিন্ন বয়সে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন লক্ষণ (ক্রিসেক, পাতা পোড়া ও ফ্যাকাশে হলুদ) দেখা দেয়।
  • এ রোগের আক্রমণের ফলে প্রত্যেক বছর ধানের ফলন গড়ে শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ কমতে পারে।

ক্ষতির ধরণঃ

  • আক্রান্ত গাছের নিচের পাতা প্রথমে নুয়ে পড়ে এবং শুকিয়ে মারা যায়। এভাবে গোছার সকল পাতাই মরে যেতে পারে। 
  • এ অবস্থাকে ক্রিসেক বা নেতিয়ে পড়া রোগ বলা হয়। 
  • চারা বা প্রাথমিক কুশি বের হওয়ার সময় গাছের পাতা বা পুরো গাছটি ঢলে পড়ে। মাঝে মাঝে আক্রমণ প্রবণ জাতের ধানে পাতাগুলো ফ্যাকাশে হলদে রঙের হয়। 
  • গাছের বয়স্ক পাতাগুলো স্বাভাবিক সবুজ থাকে, কিন্ত কচি পাতাগুলো সমানভাবে ফ্যাকাশে হলদে হয়ে আস্তে আস্তে শুকিয়ে মারা যায়। 
  • পাতা পোড়া রোগের লক্ষণের ক্ষেত্রে প্রথমে পাতার কিনারা অথবা মাঝে নীলাভ সবুজ রঙের জলছাপের মত রেখা দেখা যায়। 
  • দাগগুলো পাতার এক প্রান্ত, উভয় প্রান্ত বা ক্ষত পাতার যে কোন জায়গা থেকে শুরু হয়ে আস্তে আস্তে সমস্ত পাতাটি ঝলসে বা পুড়ে খড়ের মত হয়ে শুকিয়ে যায়। 
  • আক্রমণ প্রবণ জাতের ধানে দাগগুলো পাতার খোলের নিচ পর্যন্ত যেতে পারে। 
  • এক সময়ে সম্পূর্ণ পাতাটি ঝলসে যায় বা পুড়ে খড়ের মত হয়ে শুকিয়ে যায়। 
  • রোগ সমস্ত জমিতে ছড়িয়ে পড়লে পুড়ে গেছে বলে মনে হয়।

ক্ষতির ব্যপ্তিঃ

  • ব্যাকটেরিয়াজনিত পাতা পোড়া রোগের আক্রমণের ফলে প্রত্যেক বছর ধানের ফলন গড়ে শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ কমে যায়।

অনুকূল পরিবেশ

  • শিশির, সেচের পানি, বৃষ্টি, বন্যা এবং ঝড়ো হাওয়ার মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। 
  • ব্যাকটেরিয়া কোষগুলো একত্রে মিলিত হয়ে ভোরের দিকে হলদে পুঁতির দানার মত গুটিকা সৃষ্টি করে এবং এগুলো শুকিয়ে শক্ত হয়ে পাতার গায়ে লেগে থাকে। 
  • পরবর্তীকালে পাতার গায়ে লেগে থাকা জলকণা গুটিকাগুলোকে গলিয়ে ফেলে এ রোগের জীবাণু অনায়াসে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
আক্রান্ত ফসলের নমুনা

জৈবিক ও যান্ত্রিক পদ্ধতিতে দমনঃ

  • রোগাক্রান্ত জমির ফসল কাটার পর নাড়া পুড়িয়ে ফেলতে হবে। 
  • ঝরো বৃষ্টির পর ইউরিয়া সার দিবেন না। 
  • রোগ দেখার পর ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ বন্ধ করুন । 
  • ক্রিসেক আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলে পার্শ্ববর্তী গাছ থেকে কুশি এনে লাগিয়ে  দেয়া। 
  • আক্রান্ত ক্ষেতের পানি বের করে দিয়ে জমি ভেদে ৭-১০ দিন শুকানো। 
  • আক্রান্ত ক্ষেতে বিঘা প্রতি ৫ কেজি পটাশ সার প্রয়োগ করে মাটিতে ভালভাবে মিশিয়ে দিলে এ রোগের তীব্রতা কমে।

রাসায়নিক পদ্ধতিতে দমনঃ

  • চারার বয়স ৫৫-৬০ দিন হলে- কন্‌জা প্লাস ১০ এস সি ৫ মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। একর প্রতি মাত্রা ১০০ মিলি। 
  • অথবা ডিফার ৩০০ ই সি ৭.৫ মিলি প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে স্প্রে করতে হবে। একর প্রতি মাত্রা ১৫০ মিলি।

সুপারিশকৃত পণ্য সমূহ

আমাদের ব্র্যান্ডসমূহ